যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে নতুন করে ব্যাপক পরিমাণে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত দু’জন নিহত ও অনেক বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দেশটিতে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে সোমবার সেখানকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রাশিয়ার এই হামলার কারণে রাজধানী কিয়েভসহ দেশজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসন শুরুর পর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এটি ‘নতুন ঢেউ’ বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা।
গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় রাশিয়ার ব্যাপক বিমান হামলার পর নতুন করে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে, কিয়েভের কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের সতর্ক করে জানিয়েছিল, পূর্ববর্তী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎস্থাপনার কাজ মেরামতের পরই কেবল জরুরি ‘ব্ল্যাকআউট’ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
লন্ডন-ভিত্তিক ইন্টারনেট সংযোগ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা নেটব্লকস বলেছে, রাশিয়ার হামলার কারণে ইউক্রেনের একাধিক অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ বর্তমানে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, রুশ হামলা থেকে বাঁচতে ইউক্রেনের রাজধানীর বিশাল আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোতে ভিড় করছে মানুষ। এ সময় পুরুষ, নারী এবং শিশুদের গরমের টুপি, মোটা কোট এবং হুড পরে বিষণ্ণভাবে বসে থাকতে দেখা গেছে। কিয়েভের তাপমাত্রা প্রায় মাইনাস ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (২৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট) নেমেছে।
ইউক্রেনজুড়ে রুশ বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছে সোমবার। এই বিষয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের কর্মীদের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেছেন, সতর্ক সংকেত উপেক্ষা করবেন না।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মাইকোলাইভের মেয়র বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কায় এই অঞ্চলের আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়ায় রাশিয়ান সৈন্যরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমবর্ধমানভাবে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। যে কারণে শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মুখোমুখি হয়েছেন ইউক্রেনীয়রা। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার কারণে প্রতিবেশী মলদোভায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিদ্যুৎ কোম্পানি মোল্ডইলেক্ট্রিকা।