Date: May 06, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / দৈনিক বজ্রশক্তির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত; গণতন্ত্রের নামে গণবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়ার আহ্বান

দৈনিক বজ্রশক্তির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত; গণতন্ত্রের নামে গণবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়ার আহ্বান

November 26, 2023 07:40:26 AM   স্টাফ রিপোর্টার
দৈনিক বজ্রশক্তির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত; গণতন্ত্রের নামে গণবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়ার আহ্বান

ওবায়দুল হক বাদল: 
‘গণতন্ত্রের নামে গণবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখে দিন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার ১১ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২০২৩ পালিত হয়েছে। 
এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহিরুল হক চৌধুরী হলে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 
দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এসএম সামসুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজের) সাবেক সভাপতি সাংবাদিক নেতা আবু জাফর সূর্য। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের চেয়ারম্যান এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। 
‘গণতন্ত্রের নামে গণবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখে দিন’ প্রতিপাদ্যের উপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রধান আলোচক এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন- বহু ঝড়-ঝাপ্টা, চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ১১ বছরে পদার্পণ করল দৈনিক বজ্রশক্তি। কোনো প্রতিবন্ধকতাই বজ্রশক্তির অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরকে এতটুকু ক্ষীণ করতে সক্ষম হয়নিÑ বলেন হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।  
তিনি বলেন, পত্রিকা প্রকাশ কেউ লাভের জন্য করে না, ইতিহাস তাই বলে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল অসামান্য। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অন্যায়, জুলুম, নির্যাতন, বঞ্চনা, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের শক্তি জুগিয়েছে সে সময়ের পত্রিকাগুলো। দৈনিক বজ্রশক্তিও একটি আদর্শ নিয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ যখন জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িক শক্তির কালো থাবার কবলে পড়ছিল, দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি, উন্নতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চলছিল তখন সর্বপ্রথম মাঠে নেমেছিল দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকা। এজন্য আমরা কিছু সমস্যার মুখোমুখিও হয়েছি, এক শ্রেণির উগ্রবাদী গোষ্ঠী আমাদের নানা ধরনের মিথ্যা অপবাদ দিতে শুরু করলো। আমরা জানি, গণমাধ্যম মানুষের মনোজগতে প্রভাব ফেলতে পারে। গণমাধ্যমের লেখায়, কথায় মানুষ সত্য জানতে পারে, ন্যায়-অন্যায়ের তফাৎ করতে পারে। তাই পত্রিকার মাধ্যমে যদি আমরা তাদের সচেতন করে তুলতে পারি তবেই আমাদের পত্রিকা প্রকাশ সার্থক হবে। এটাই দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার লক্ষ্য বলেন হেযবুত তওহীদের এই নেতা। 
হেযবুত তওহীদের এই নেতা বলেন, কোন ধরনের অপশক্তির কাছে মাথা নত না করে সব ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অসত্য-দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই কলমযোদ্ধা নাম স্বার্থক হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 
পশ্চিমা গণমাধ্যমের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, একচেটিয়াভাবে হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলে প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো। অথচ তারা মুক্তিকামী দল। প্রায় ১৫ হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হলো যার মত্যে ৫ হাজার শিশু। এনিয়ে তাদের কোনো মন্তব্য নেই। গণমাধ্যমের কাছে এই একচোখা একপেশে মনোভাব কাম্য নয়Ñমন্তব্য করেন তিনি। 
মানুষের তৈরি জীবনব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজতন্ত্রের কবর হয়ে গেছে বহু আগে, ফ্যাসিবাদ মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, বহু ফ্যাসিস্ট আত্মহত্যা করেছে, সমাজতন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে, গণতন্ত্রও লাইফ সাপোর্টে আছে। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য আমরা দেখেছি। প্রতি ৫ বছর পর পর মহা সংকটে পরতে হচ্ছে জাতিকে। একদল ক্ষমতায় গেলে পরের দিন থেকেই শুরু হয় তাকে টেনে-হেচরে নামানোর প্রচেষ্টা। সমানে চলে জ্বালাও-পোড়াও নৃশংসতা। বাসে আগুন দিয়ে নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। সাপের মত পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা হচ্ছে। ক্ষমতায় যাবার লড়াইয়ে হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটের নামে নৃশংসতা মানুষ দেখতে দেখতে অতিষ্ট হয়ে গেছে। মানুষের তৈরি ত্রুটিপূর্ণ সব সিস্টেমই তো আমরা প্রয়োগ করে দেখলাম। সবগুলোই মানুষকে কাক্সিক্ষত শান্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত এসব তন্ত্র-মন্ত্রের প্রাণশক্তি ফুলিয়ে গেছে। মানুষের তৈরি এসব তন্ত্র-মন্ত্র বাদ দিয়ে স্রষ্টার দেওয়া সার্বজনীন সিস্টেমে প্রত্যাবর্তন করার আহ্বান জানান তিনি। 
পরিশেষে তিনি বলেন, যার জ্ঞান, প্রজ্ঞা, শক্তি, সাহস, অর্থ মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হয় সেই প্রকৃত জ্ঞানী। দৈনিক বজ্রশক্তি প্রকৃত সত্য তুলে ধরছে। এমন একটি আদর্শ মানুষের সামনে প্রস্তাব করছে যা গ্রহণ করলে মানবজাতি শান্তিতে প্রত্যাবর্তন করতে পারবে। তিনি সবাইকে দৈনিক বজ্রশক্তির পাশে থেকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার আহ্বান জানান। 
প্রধান অতিথি আবু জাফর সূর্য তার মূল্যবান বক্তব্যে বলেন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিক একে অন্যের পরিপূরক। গণমাধ্যম ও সুশাসন হাত ধরাধরি করে চলে। গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে চলতে না দিলে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে না। তাই গণমাধ্যমের উপর সরকারসহ সবার আস্থা রাখতে হবে। 
তিনি আরো বলেন, ১১টি বছর একটি পত্রিকা প্রকাশ করা ছোট কোন ব্যাপার নয়, তাই এই সময়ে যারা পত্রিকাটি সচল রেখেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আগামী দিনে শুধু ১১ বছর নয়, এই পত্রিকার একশ’ বছর পূর্তি হবে সেই আশা রাখি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খাইরুল আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধক্ষ্য আশরাফুল ইসলাম, ভাষা ও সাহিত্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি রাজিয়া রহমান পিংকি, শীপ ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালের পরিচালক ফুতশি কুন, ঢাকা সাংবাদিক পরিবার বহুমুখী সমবায় সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু, মিডিয়া জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি বাদল চৌধুরী। 
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক দেশের পত্রের সম্পাদক রূফায়দাহ পন্নী, হেযবুত তওহীদের সাহিত্য সম্পাদক কবি রিয়াদুল হাসান, দৈনিক বজ্রশক্তির সিনিয়র সাব এডিটর ডা. মাহাবুব আলম মাহাফুজ, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স কাউন্সিল (বিসিআরসি) আলী আশরাফ আখন্দ প্রমুখ। 
সাংবাদিকতায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয় ঝিনেদা টিভির চেয়ারম্যান রিজভী ইয়ামিন, বাংলাদেশ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি শাহেদ আহম্মেদ, ঝিনাইদহের মহেশখালী উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি বিএম শামীম, দৈনিক দেশেরপত্রের নিজস্ব প্রতিনিধি কামরান হাসান, সাপ্তাহিক সারসা বার্তার সহকারী সম্পাদক শরিফুল ইসলাম প্রমুখকে। 
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে জমকালো আয়োজনে আনন্দঘন পরিবেশে অতিথিরা কেক কাটেন। এরপর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাটি শিল্পগোষ্ঠীর শিল্পীরা গানে গানে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।